স্বাস্থ্যবিধি



রাতে বেশি  খান ?

রাতের খাবার খেতে দেরি হয় রোজ? আর এর ফলে ওজন বৃদ্ধি! সত্যি না মিথ্যে?

ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছিলাম আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ মেকস এ ম্যান হেলদি ওয়েল্দি ওয়াইজ। অর্থাৎ তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও জলদি উঠে পড়া আমাদের সবদিক দিয়ে সবল করে তোলে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের বদলে যাওয়া লাইফস্টাইলে লেট নাইট-ই ফ্যাশন। তার সাথে এসেছে খাওয়ার সময়ে বদল।

শরীরের বডি ক্লক তো খাওয়ার রুটিনের তোয়াক্কা করবেনা। শরীরের নির্দিষ্ট নিয়মের হেরফের হলেই স্বাস্থ্যের দফারফা হওয়া অনিবার্য। যার সবচেয়ে বড় কুফল ওজন বৃদ্ধি ও তার সাথে বিভিন্ন ধরনের রোগ।

 

দেরিতে খাবার খাওয়ার ঝুঁকিঃ

অফিসে কাজ করতে করতে হোক কি ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে হোক অথবা নিজের আলসেমির জন্য হোক, আমাদের ডিনার করতে বাহানার অভাব হয় না। এবার দেখে নিন শরীরে এর ফলে বাসা বাঁধছে কত অজানা রোগ।

দেরি করে খেলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের আধিক্য বেড়ে যায়। যার জন্য মানসিক অবসাদ, খিটখিটে মেজাজ, মুড সুইং ও ডিপ্রেশন এর সিম্পটম দেখা যায়। রাতে খাবার জন্য পরের দিন খিদে মন্দা ও হয়।

খাবার যদি পেটে দেরি করে ঢোকে তবে শরীর ফ্রি রাডিক্যাল মুক্ত করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। যার ফলে কোষের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে ক্যান্সার এর সম্ভাবনা বাড়ে।
দেরিতে খাওয়া মানেই অনেক্ষন খিদে চেপে ধরে রাখা। ফলে শরীরে গ্যাস এবং এসিডিটি হতে পারে।আর এর থেকে আলসার অব্দি গড়াতে পারে রোগ।

বেশি রাতে খাবার খাওয়ার আর একটি অসুবিধে হলো ঘুমের সমস্যা। এছাড়াও সুগার লেভেল বেড়ে যায় তরতরিয়ে কারণ রাতে খাওয়া গ্লুকোজ শরীর ঠিকঠাক সংশ্লেষ করতে পারেনা। যে কারণে ডায়াবেটিস ও হয় অতি অল্প বয়সে।

অনেকক্ষন ধরে খিদেয় থাকলে আমাদের মেটাবলিক রেট স্লো হয়ে যায়। এরপর খাবার খেলেই তা চট করে বেড়ে যায় ফলে আমরা ওয়েট গেন করি।

গবেষণায় দেখা গেছে যত বেশি রাত করে খাওয়া হয় ততই আমাদের শরীরের মধ্যে ইনসুলিন ও লেপ্টিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যা বেশি করে চর্বি জমাতে সাহায্য করে।

 

রিসার্চ কি বলছে !

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অফ মেডিসিন এর গবেষকরা বলছেন যে অসময়ে খেলে বিশেষত রাতের বেলা যথাযথ টাইমের পর খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। যার দরুন ওজন বেড়ে ওবেসিটির দিকে ঠেলে দেয় মানুষকে।
একটি সমীক্ষা চালানো হয় সঠিক ওজনসম্পন্ন ৯জন মানুষদের মধ্যে। যেখানে সকাল সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে তিনবেলা খাবার দিয়ে তাদের উপর আট সপ্তাহ যাবৎ একটি গবেষণা করা হয়।
এর মধ্যে কিছুজন রাত ১১টার পর খাবার গ্রহণ করেন। তাদের ক্ষেত্রে শারীরিক পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তাদের শরীরে গ্লুকোজ, হৃদরোগ ও ট্রাইগ্লিসারয়েড এর মাত্রা বেড়ে স্বাস্থ্যের ব্যাধি দেখা দিয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক জানাচ্ছেন দেরিতে খেলে মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব পড়ে ও তার স্মৃতিশক্তি ক্ষয় হয়। দুঃস্বপ্ন যারা দেখেন তাদের অধিকাংশই রাতে দেরি করে খেয়ে ঘুমোতে যান।
তুরস্কের ডকুস ইউনিভার্সিটির গবেষণা আবার বলছে দেরিতে খেলে পরের দিন বেশি খিদে অনুভূত হয়। যা পরবর্তীতে বেশি ওজন বাড়াতে সহায়ক হয়।

 

রাতে খাবার স্বাস্থ্যবিধিঃ

চেষ্টা করুন রাতে ৮টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলতে। রাতের বেলায় ভারী কিছু না খাওয়াই মঙ্গল। তেল মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করুন।
রাতের বেলায় ভারী খাবার খেলে তা পরিপাকে অসুবিধায় পরে শরীর কারণ শরীর সম্পূর্ণ অকেজো থাকে রাত্রিতে। এক্টিভিটি না হবার জন্য অম্বল এর সমূহ সম্ভাবনা বাড়ে।
রাতে খাবার পর ধূমপান কখনোই করবেন না। রাতের বেলায় একটি সিগারেট খাওয়া সারাদিন ধরে খাওয়া ১০টা সিগারেট খাওয়ার সমতুল্য।
অনেকের অভ্যাসবশত রাতে খাবার পর ও চা খেয়ে থাকেন । এবার থেকে বন্ধ করুন। চা এর ট্যানিনে থাকে এসিড যা প্রোটিন হজমে বাধা দেয়।
লোকে বলে ভরা পেটে ফল। সেটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। খাবার পর পরই ফল খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। অন্তত ঘন্টা খানেক বিরতি দিয়ে তারপর ফল খাবেন।
খেয়েই বিছানা নেবেন না। তাতে করে শরীরে বিপাক ক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়। খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নিয়ে শুতে যান। এতে উপকার পাবেন।
অতিরিক্ত গরমে খেয়ে কখনই সাওয়ার নিতে যাবেন না রাতে। এতে করে আমাদের স্নায়ু শিথিল হয়ে যায় আর আমাদের রক্তপ্রবাহ কমে যায় দেহ জুড়ে। ফলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি ও বাড়ে।

সেভারস হল হলো একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি সরাসরি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা,কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পোল্যান্ড ইত্যাদি দেশ থেকে আমদানি করা সমস্ত প্রয়োজনীয় পণ্য আপনার দোরগোড়ায় খুঁজে পেতে পারেন।

Useful links

Office Address

Our Map Location

Copyright©2023. Savers Hall. All Rights Reserved.